E-token Time For Indian Visa
Most of the people know that, To get Indian Visa E-token is too much difficult. If you able to try just perfect time, may be you will get an e token for Indian visa. We try to serve you the perfect time for E-token in this site Every day.
New system For Indian E token July 11 2015
Surely everyone is doing well. I am with you again. This is my "New System for Indian E-token- 2015". Indian authorities did not consider that Bangladeshi, people are mankind. Last Friday afternoon once again they change their websites system and in front of us brought a new critical situation. Active all tricks have to change for this situation. Come and see the new system
Make Your Pc Faster In An Easy Way-part-3
Slim Cleaner is a free software for cleaning and optimizing PC and Mobile Device. It's a Golden Verified Partner of Microsoft Corporation. Specially Designed for WinXp, Vista, Win7, Win 8 and Win 10.
Remove shortcut virus in 30 second
Here we will show how you can easily get rid of this problem and remove "Shortcut Virus" from your PC.
Required Documents for Indian Visa Purpose
In fact, most of people do not know what to do when submit an e-token to IVAC/Visa Processing Center/Indian Embassy and which documents they have to collected and sorted. In the mean time, many local broker or fraud lead them to earn some big amount from sufferer. Let’s go to topic.
Sunday, 17 February 2019
Saturday, 16 February 2019
১৫ আগস্ট, শোক দিবস
১৫ আগস্ট ১৯৭৫: এক অজানা অধ্যায়
দিন। কখনও কখনও আমরা অতীত নিয়ে বেশি চিন্তা না করে, সংক্ষিপ্ত স্মরণের পর ফিরে যাই দৈনন্দিন ভাবনায়।
আবার কখনও আমরা থমকে দাঁড়াই। অতীতের ঘটনা নিয়ে গভীর বিবেচনার স্বার্থেই আমাদের থামতে হয়। একজন লেখকের কাজ এটাই। অতীতে কী ঘটেছিল তা নিয়ে ভাবা, আর পুনর্মূল্যায়ন করা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার জন্য তেমনই একটা দিন। আগেও আমি বলেছি, ১৫ আগস্ট আসলে উইলিয়াম ফকনারের এক উক্তি আমার মনে পড়ে। উক্তিটা হলোঃ "অতীতের মৃত্যু হয় না কখনও, এমনকি অতীত বলে কিছু নেই।"
কোন কোন বছর আমি একটু থেমে সেদিনকার কথা স্মরণ করি। তারপর আবার নিজের কাজে ফিরে যাই। কিছু স্মৃতি মাথায় আটকে থাকে।
তবে এই বছর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের পাতা উলটে দেখব। সেই ইতিহাস কেবল বাঙালিদের নয়, আমার মতো আমেরিকানদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকায় সংঘটিত হয়েছিল এক হত্যাকাণ্ড।
সেই হত্যাকাণ্ড সম্ভব হয়ে উঠেছিল কয়েকটি ঘটনার ধারাবাহিকতায়। সে হত্যাকাণ্ডে কেবল কি বাংলাদেশিরাই জড়িত ছিল? নাকি তাদের উৎসাহিত করা হয়েছিল, এমনকি হত্যার সুযোগও করে দেওয়া হয়েছিল?
বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্র, দুই দেশেই এমন কিছু মানুষ আছেন যারা হত্যাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির হাতিয়ার বানানোর বিপক্ষে। তারা মনে করেন, এরকম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় নেওয়া উচিত।
আজ আমরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সহিংসতার কথা স্মরণ করি। কিন্তু সে ঘটনার এতগুলো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে আমাদের বোঝায় ঘাটতি রয়ে গেছে।
অনেকটাই এখন আমরা জানি। তারপরও এখন আমাদের হাতে এসেছে নতুন তথ্য। হয়ত এই তথ্য নতুন সূত্রের খোঁজ দেবে, আমাদের জানার পরিসর বিস্তৃত করবে।
কিছু দিন আগে ঢাকায় সংক্ষিপ্ত সফরে আমি এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেই। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার সম্পর্কে ভাবছিলাম আমি। ভাগ্য ভালো যে আমরা দুইজনই জীবিত আছি।
তিন দশক আগে যেদিন তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল আমার, সেদিন তিনি আমার পাশে বসে নিচুস্বরে জানিয়েছিলেন, আমার সাথে জরুরি কিছু কথা আছে। শুধু এটুকুই। তবে তাঁর চেহারা ছিল অত্যন্ত গম্ভীর।
আমরা একে অপরকে চিনতাম। খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল তা না। তবে তাঁর দুর্দান্ত এক সাহসী কর্মকাণ্ডের কথা জানতাম আমি। একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে তিনি যে ঝুঁকি নিয়েছিলেন সেজন্য আমি তাকে শ্রদ্ধা করতাম। সেদিন সন্ধ্যায় আমি ঢাকায় তাঁর বাড়িতে গেলাম। ভদ্রলোক পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আমাকে এক আড্ডায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেখানে অনেক ভিড় ছিল, একান্ত আলাপ করাটা ছিল কঠিন। পরদিন সন্ধ্যায় আবারও আসার অনুরোধ করলেন তিনি। আমি বললাম সময়মত চলে আসব।
অবশ্য সে কথা আমি রাখতে পারিনি, কারণ পরদিনই আমাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্নেল আবু তাহেরের গোপন বিচার নিয়ে রিপোর্ট করতে আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম। সেটাকে বিচার বলাটা ঠিক হবে না। আসলে সে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জেনারেল জিয়া তার বন্ধু আবু তাহেরকে ফাঁসিতে ঝোলানোর ব্যবস্থা করছিলেন। একসময় এই তাহেরই জিয়ার জীবন বাঁচিয়েছিলেন।
আমি ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ, দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসির জন্য রিপোর্ট পাঠাচ্ছিলাম। ঢাকাসহ বাংলাদেশের সব অঞ্চলের সংবাদমাধ্যমেই তাহেরের বিচার সংক্রান্ত খবরটি পুরোপুরিভাবে ধামাচাপা দেওয়া হলো। আমার করা একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিবিসির বাংলা সংস্করণে প্রথম তাহেরের বিচারের খবরটি প্রকাশ পায়।
ব্যাংককে রয়টার্সের অফিসে আমার প্রতিবেদন পাঠানোর একটা উপায় করেছিলাম। সেখান থেকে ওরা হংকং আর লন্ডনে আমার সম্পাদকদের কাছে পাঠিয়ে দিত। ঢাকা টেলেক্স অফিস থেকে আমার প্রতিবেদন আদান-প্রদান প্রক্রিয়া এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রাখা হলো। আমাকে তিনদিন ধরে আটকে রাখার পর ব্যাংককে পাঠিয়ে দেওয়া হল। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক, দুইদিক দিয়েই সম্পূর্ণ সেন্সরশিপ আরোপ করা হল।
ওই ভদ্রলোক কী বলতে চেয়েছিলেন তা আর শুনতে যাওয়া হয়নি আমার। ৩০ বছরেরও বেশি সময় পর আমি যখন একটি সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকা যাই, আমি সিদ্ধান্ত নিই ওই লোকের সঙ্গে দেখা করব। আর কিছু না হোক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারার জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চাইব। তবে এত বছর আগে তিনি আমাকে কী বলতে চেয়েছিলেন তা জানার জন্য খুব আগ্রহ হচ্ছিলো। আমি তাঁর অফিসে যোগাযোগ করার পর তিনি বললেন, আপনি এখুনি চলে আসুন।
আমি পৌঁছানোর পর তিনি আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন। ১৯৭৬ সালের জুলাইয়ের সে দিনটিতে দেখা না করায় তিনি আমাকে খানিক তিরস্কার করলেন। বললেন, আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, আর সেই রাতেই আপনার গ্রেফতার হতে হলো? অবশেষে ক্ষমা মিলল। চা দেওয়া হলো। তাঁর আস্থাভাজন এক ব্যক্তি যেন আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন, তিনি তার ব্যবস্থা করলেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি যে গুরুত্বপূর্ণ কথাটা আমাকে বলতে চেয়েছিলেন তা মনে আছে কিনা। জবাবে তিনি বললেন, ‘এখনও আমার স্পষ্ট মনে আছে।’ এরপর তিনি গম্ভীর হয়ে গেলেন।
পরবর্তী এক ঘণ্টা তিনি আমাকে এক গুরুত্বপূর্ণ কাহিনী শোনালেন। তারপর কয়েকদিন ধরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আমরা, দুপুর অথবা রাতের খাবার খেতে খেতে। তাঁর স্ত্রী ছিলেন আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী। স্বামীর কথার সত্যতা নিশ্চিতের পাশাপাশি কোথাও কোথাও নিজের স্মৃতি থেকে আরও কথা জানাচ্ছিলেন তিনি। এই হল সেই বৃত্তান্ত।
ঘটনাটা ছিল ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের ঠিক আগে।
তখনকার ঢাকার কূটনৈতিক মহলে ওই ভদ্রলোকের অনেক বন্ধু ছিল। ব্যবসার খাতিরেই এসব মানুষের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব এবং সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তিনি আমাকে বললেন, মার্কিন দূতাবাসে তখন তাঁর একজন বন্ধু ছিল। এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা। তার নাম ফিলিপ চেরি। তাঁর কথায়, ফিলিপ চেরি ছিলেন এক সুদর্শন ও চমৎকার ব্যক্তিত্বের মানুষ। বাংলাদেশের জন্য তার মনে অনেক ভালবাসা। মাঝে মাঝে তাঁর গাড়িতে করে চেরিকে নিয়ে যেতেন নিজের কারখানাগুলোতে। ফিল চেরির মুখে বারবার শোনা যেত, বাংলাদেশ কি সুন্দর একটা দেশ!
১৯৭৫ সালের জুলাইয়ের শেষে কিংবা আগস্টের শুরুতে ফিলিপ চেরি ওই ভদ্রলোককে ফোন করে বলেন, তিনি তাঁর বাড়িতে একটি নৈশভোজের আয়োজন করতে পারেন কিনা। ভদ্রলোক সানন্দে রাজি হলেন। চেরি কি নির্দিষ্ট কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে চায়? চেরি তাঁকে বলল, সে চায় কেবল একজন অতিথিকে আমন্ত্রণ করা হোক। তবে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে আসতে কোনও সমস্যা নেই। সেই অতিথি ছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান।
ভদ্রলোক জেনারেল জিয়াকে চিনতেন। তিনি জানালেন, ওই নৈশভোজ আয়োজন করতে পারলে তিনি খুশিই হবেন। চেরি কয়েকটি সম্ভাব্য তারিখের কথা বললেন। নৈশভোজের আয়োজন হলো। জেনারেল জিয়া তার স্ত্রী খালেদাসহ সেখানে পৌঁছালেন। ফিলিপ চেরিও তার স্ত্রীসহ সেখানে গেলেন। ওই নৈশভোজে এই তিন দম্পতির বাইরে আর কেউ ছিলেন না।
আমার বন্ধুটি জানান, অভ্যুত্থানের এক সপ্তাহ আগে নৈশভোজটি আয়োজিত হয়েছিল। তবে তাঁর স্ত্রীর স্মৃতি বলে, এটা দশ দিন আগের ঘটনা। দুই অতিথি তাঁর বাড়িতে পৌঁছানোর পরপরই পরিষ্কার হয়ে গেলো, তারা নিজেদের মধ্যেই আলাপ করতে এসেছে।
জেনারেল জিয়া ও ফিলিপ চেরি বাগানের ভেতরে গেল এবং খাবার পরিবেশনের আগ পর্যন্ত একে অপরের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলল। জিয়া ও চেরিকে দেখে মনে হলো তারা একে অপরের চেনা। নৈশভোজের পর তারা আরেকবার বাগানে গেল এবং আলোচনা করতে লাগল। ওই সময়ে দেখে মনে হয়েছিল তারা গালগল্প করছে। অবশ্য অভ্যুত্থানের পর ভদ্রলোক ও তাঁর পরিবারের উপলব্ধি হয় যে তাদের ব্যবহার করা হয়েছে।
অভ্যুত্থানের পরদিন ভদ্রলোক এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি গাড়ি চালিয়ে গুলশানে ফিলিপ চেরির বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে এক নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। তাঁর চোখে ছিল ক্ষোভের অশ্রু। তিনি প্রশ্ন করতে থাকেন, কীভাবে এমনটা হল। বারবার বলেন, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব তাঁর নিজের মায়ের মতো ছিলেন। তারা তাকে মেরে ফেলেছে। কেন? পুরো পরিবারকে হত্যা করা নিয়ে তিনি ক্রুদ্ধ ও মর্মাহত ছিলেন। বারবার জানতে চাইছিলেন, ‘কীভাবে এমনটা হলো?”
চেরির স্ত্রী তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল, তাকে চা দিয়েছিল। চেরি তাকে বলছিল, “আমি জানি তুমি ওই পরিবারের খুব কাছের মানুষ ছিলে।” রাগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবসায়ী ভদ্রলোক চলে যান। এরপর তিনি আর চেরির দেখা পাননি। তাদের পরিবার রাজনৈতিকভাবে সচেতন। তারা জানেন, জিয়া-চেরির সেই ডিনার কোনও সামাজিক সাক্ষাৎ ছিল না। তাঁরা ভালো করেই বুঝেছিলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের সময় জিয়ার ভূমিকা কী ছিল, ১৫ আগস্ট মেজর ফারুক ও মেজর রশিদের সেই হত্যাকাণ্ড সংঘটনের সময় সেনাবাহিনীকে তাদের বাধা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে তিনি কী করেছিলেন।
অনেকেই বুঝতে পেরেছিল যে অভ্যুত্থানে জিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জেনারেল জিয়া বিরোধিতা করলে এই অভ্যুত্থান সম্ভবই ছিল না। তথ্য-প্রমাণ থেকেও বোঝা যায়, অভ্যুত্থানে মূল কারিগরের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জিয়া। খন্দকার মুশতাক আহমেদের চেয়ে তার ভূমিকাই বড় ছিল।
পরবর্তী আরেক ঢাকা সফরে, এক সন্ধ্যায় চেরি-জিয়ার বৈঠক নিয়ে আলাপকালে ওই ব্যবসায়ী ভদ্রলোককে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, চেরি যে সে সময়ের ঢাকার সিআইএ স্টেশন প্রধান ছিল তা তিনি জানতেন কিনা। আমার কথা শুনে তিনি চমকে ওঠেন। বলেন, আমি ভেবেছিলাম সে দূতাবাসের কোনও রাজনৈতিক কর্মকতা।
চেরিই যে ছিল ঢাকায় তখনকার সিআইএ স্টেশন প্রধান, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, এবং আমি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আগের লেখাতেও এটা উল্লেখ করেছি । একদম নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি আমি। আমার সূত্র - বাংলাদেশে তখন নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিস ইউজিন বোস্টার স্বয়ং।
১৯৭৪ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৭৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তাদের সাথে কিছু ব্যক্তির ক্রমাগত মিটিং হয়। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রার্থী ছিল। পরবর্তী কোনও এক নিবন্ধে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে।
অভ্যুত্থানের সপ্তাহখানেক আগে ফিলিপ চেরি ও জিয়াউর রহমান ঢাকায় কারও বাসায় বৈঠকে বসে। উপরমহলের সম্মতি না থাকলে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসা কিংবা কথা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না চেরির। রাষ্ট্রদূত বোস্টার যেহেতু এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, তার মানে তাকে অন্য কেউ নির্দেশনা দিয়েছিল। সিআইএ স্টেশন চিফ হয়তো ওয়াশিংটন কিংবা ল্যাংলিতে সিআইএ সদরদপ্তরের নির্দেশমতো কাজ করছিল।
ব্রিটিশ লেখক ক্রিস্টোফার হিচেন তার বই ‘দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার’-এ বাংলাদেশ নিয়ে একটি অধ্যায় রেখেছেন। তার মতে, ১৯৭৪ সালের আগস্টে নিক্সনের মৃত্যুর পর এই নির্দেশ দেওয়া ও অভ্যুত্থানের সমর্থন করার মতো সক্ষম একমাত্র একজনই ছিলেন। হিচেন তার বইয়ে লেখেন:
"রাষ্ট্রদূত বোস্টার বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন যে তার সিআইএ স্টেশন নেপথ্য কোনও ক্ষমতাশক্তির নির্দেশনায় কাজ করছে, যার সম্পর্কে তিনি অবগত নন। ওয়াশিংটনের সম্পৃক্ততা ছাড়া এধরণের অপারেশন হত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও অর্থহীন। আর সেখানে, ফোর্টি কমিটি [সিআইএর গোপন অপারেশনের নিয়ন্ত্রক] আর জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সুতো বাঁধা ছিল একজনের মুঠোতেই।"
হিচেনের মতে এই মুঠো ছিল হেনরি কিসিঞ্জারের।
ফিলিপ চেরি ও জেনারেল জিয়াউর রহমানের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন হাজির করে: মার্কিন সরকারের পক্ষে কে চেরিকে নির্দেশনা দিচ্ছিলো? তার এই নির্দেশনা কি ফোর্টি কমিটি থেকে দেওয়া হয়েছিল? নাকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে থাকা হেনরি কিসিঞ্জারের দল সরাসরি এই নির্দেশনা দেয়? পরবর্তী একটি নিবন্ধে এসব প্রশ্ন মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।
তথ্যসূত্র -ঢাকা ট্রিবিউন
২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবস
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস যা ২৬শে মার্চ তারিখে পালিত বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ডাক দেন। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পতাকা একেঁ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালায়। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গোলাবর্ষণ করা হয়, অনেক স্থানে নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং অনেক স্থানে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ড চালানো হয়। এমতাবস্থায় বাঙালিদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং অনেক স্থানেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা না করেই অনেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পরবর্তিতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাবার পর আপামর বাঙালি জনতা পশ্চিম পাকিস্তানী জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়।
অপারেশন সার্চলাইট
অপারেশন সার্চলাইট ১৯৭১সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার মধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ ও এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল। এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী শাষকদের আদেশে পরিচালিত,যা ১৯৭০ এর নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ্ এর পরবর্তি অনুষঙ্গ। অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬ মার্চ এর মধ্যে সব বড় বড় শহর দখল করে নেয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া।
স্বাধীনতার ঘোষণা
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। কথিত আছে, গ্রেপ্তার হবার একটু আগে ২৫শে মার্চ রাত ১২টার পর (অর্থাৎ, ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন যা চট্টগ্রামে অবস্থিত তত্কালীন ই.পি.আর এর ট্রান্সমিটারে করে প্রচার করার জন্য পাঠানো হয়। ঘোষণাটি নিম্নরুপ:
অনুবাদ: এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।
২৬শে মার্চ বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাসেম সহ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েক'জন কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ.হান্নান প্রথম শেখ মুজিব এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি মাইকিং করে প্রচার করেন। পরে ২৭শে মার্চ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার[১০] মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঘোষণাপত্রটির ভাষ্য নিম্নরুপ:
অনুবাদ: আমি,মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার-ইন-চিফ, শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।
আমি আরো ঘোষণা করছি যে, আমরা শেখ মুজিবর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম ও আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট-নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। এ রাষ্ট্র সকল জাতির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ মুজিবর রহমানের সরকার একটি সার্বভৌম ও আইনসম্মত সরকার এৰং বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাবার দাবিদার।
১৯৭১ সালে ২৭ মার্চের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে যা নয় মাস স্থায়ী হয়।
স্বাধীনতা দিবস উৎযাপন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস বেশ বর্ণাঢ্য ভাবে উদযাপন করা হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে উদযাপন শুরু হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়। জাতীয় স্টেডিয়ামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়।
এই দিনটিতে সরকারি ছুটি থাকে। পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে।
তথ্যসূত্র -উইকিপিডিয়া.
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস